জমি নিয়ে বিরোধ

প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মেয়েকে হত্যা, আদালতে স্বীকারোক্তি

নৌকাডুবি
স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কাগজীপাড়া এলাকা থেকে গত ১০ মে জান্নাতি খাতুনের (১৫) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন জান্নাতির চাচা খলিল হক।

মামলাটি তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, জমি সংক্রান্ত বিরোধে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজের মেয়েকেই হত্যা করেছেন জান্নাতির বাবা জাহিদুল ইসলাম (৪৫)। শুধু তাই নয়, এই হত্যায় জড়িত ছিলেন স্বয়ং জান্নাতি হত্যা মামলার বাদী খলিল।

কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তদন্ত শুরু করে মাত্র চার ঘণ্টার মধ্যে আমরা নিশ্চিত হই যে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। ১১ মে রাতে নিহত জান্নাতির বাবা, মা ও চাচিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার দায় স্বীকার করেন।'

আসামিদের বরাতে ওসি বলেন, 'ঘুমন্ত অবস্থায় ভোররাত ২টা থেকে ৩টার মধ্যে লোহার রড ও ধারালো দাঁ দিয়ে জান্নাতিকে হত্যা করা হয়। পরে তার মরদেহ বাড়ির পাশে একটি জমিতে ফেলে রাখে।'

'জান্নাতির বাবা জাহিদুলের দেখানো জায়গা থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে,' যোগ করেন তিনি।

ওসি আরও বলেন, 'প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে—জাহিদুল, তার স্ত্রী মোর্শেদা (৩৮), ভাবি শাহিনুর (৪৩) ও ভাই খলিল এই হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। আরও কয়েকজনের সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে, তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।'

কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের মিডিয়া অফিসার ও ডিবি পুলিশের ওসি বজলার রহমান গতকাল রাতে সাংবাদিকদের বলেন, '১২ মে দুপুরে জাহিদুল ইসলাম, মোর্শেদা বেগম ও শাহিনুর বেগমকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে তারা এই হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। এরপর আদালত তাদের কারাগারে পাঠান।'

তিনি বলেন, 'বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। হত্যার পেছনের সব কারণ আমরা খতিয়ে দেখছি।'

সংবাদ সম্মেলনে তিনি মন্তব্য করেন, 'এটি কেবল একটি পারিবারিক ট্র্যাজেডি নয়, সামাজিক অবক্ষয়ের প্রতিচ্ছবি—যেখানে সম্পত্তির লোভে নিজের কন্যাকে হত্যা করেছেন বাবা-মা।'

থানা সূত্রে জানা গেছে, ১০ মে সকালে ৯৯৯ জরুরি সেবা নম্বরে কল পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং জান্নাতির মরদেহ উদ্ধার করে। সেদিন রাতে হত্যা মামলা করেন খলিল।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে জান্নাতিকে হত্যা করেছে।

Comments

The Daily Star  | English
chief adviser yunus on july charter 2025

Yunus rules out referendum over July Charter

Chief adviser insists party agreement key to polls; vows justice, reform ahead of election

10h ago