হাসিনা যাওয়ার পর রাসেলস ভাইপার সাপও চলে গেছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। ছবি: সংগৃহীত

সরকারের বিরুদ্ধে সহিংস বিক্ষোভের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে যাওয়ার পর রাসেলস ভাইপার সাপটিও চলে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

তিনি বলেন, 'আমাদের এখানে একটা জিনিস বেশ কয়েকবার আলোচনায় এসেছে। তা হলো—আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও দুর্নীতি। আমি যখন এ কথাগুলো শুনি, তখন আমার রাসেলস ভাইপার সাপের কথা মনে হয়। শেখ হাসিনা যাওয়ার পর এই সাপটাও চলে গেছে।'

'আমি জানি না বিষয়টা এমন কেন,' বলেন তিনি।

আজ বুধবার রাজধানীর মতিঝিলে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির কার্যালয়ে 'বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের বৈচিত্র্যকরণ: এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ' শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

বিষধর রাসেলস ভাইপার আগে শুধু বরেন্দ্র অঞ্চলে দেখা গেলেও এখন প্রায় সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এই সাপ সাধারণত নিচু ভূমির ঘাসবন, ঝোপ-জঙ্গল, উন্মুক্ত বন, কৃষি এলাকায় থাকে। রাসেলস ভাইপার দক্ষ সাঁতারু সাপ। তাই এটি নদীর স্রোত ও বন্যার পানিতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়েছে।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, 'উপদেষ্টা পরিষদ তো পয়সা-টয়সা নেয় না। প্রধান উপদেষ্টা থেকে শুরু করে যত উপদেষ্টা রয়েছেন, তারা কেউই টাকার দিকে তাকিয়ে নেই। এই মানুষগুলো এখানে টাকার জন্য আসেননি। আমাদের কাজের সম্পর্ক বেশ স্বচ্ছ।'

তিনি বলেন, 'আমরা একে অপরের কাছ থেকে শিখি। আমরা একসঙ্গে কাজ করছি, এটাও দুর্নীতি কমার একটি লক্ষণ।'

'আপনারা জানেন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্কেলে দেশ থেকে ২৮ লাখ কোটি টাকা চুরি হয়ে চলে গেছে। এখন তো দেশ থেকে এই পরিমাণ টাকা চুরি হচ্ছে না। তবে, দুর্নীতি শেষ হয়ে যায়নি। শেষ হওয়া বেশ কঠিন,' বলেন তিনি।

শেখ বশিরউদ্দীন আরও বলেন, 'এসব সমস্যা সমাধানে আমরা বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। এই উদ্যোগগুলো চালুর কারণে দুর্নীতি কমেছে। সামনে আরও কমবে।'

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য খাতভিত্তিক অ্যাসোসিয়েশনসহ ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে—ব্যবসার ক্ষেত্রে কোনো দেশ আমাদের বন্ধু নয়, সবাই প্রতিযোগী। এটা মেনে নিয়ে নিজেদের মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। চ্যালেঞ্জের তুলনায় সামনে সুযোগ অনেক বড়। একসঙ্গে কাজ করতে পারলে সেই সুযোগ কাজে লাগানো সম্ভব।

এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, 'এলডিসি উত্তরণের পর বাংলাদেশকে যেসব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে, তার মধ্যে অন্যতম হলো পণ্য বৈচিত্রকরণ। এ ক্ষেত্রে কোন কোন পণ্য ও খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন তা খুঁজে বেড় করে অগ্রাধিকারভিত্তিক কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।'

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। এলডিসি পরবর্তী নীতিকাঠামোয় কীভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে, সে বিষয়ে ব্যবসায়ীদের প্রস্তুতি গ্রহণের পরামর্শ দেন তিনি।

সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মইনুল খান, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন।

এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং বেসরকারি খাতের সমস্যা সমাধানে বর্তমান সরকার আন্তরিক বলে জানান তারা।

Comments

The Daily Star  | English

What are we building after dismantling the AL regime?

Democracy does not seem to be our focus today. Because if it were, then shouldn’t we have been talking about elections more?

4h ago